উচ্চ রক্তচাপ কি | নিরাময়ের উপায়

রক্ত চলাচলের সময় ধমনির গায়ে যে চাপ তৈরিহয় তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে। অবস্বাদ-দুশ্চিন্তা নিরাময়ের উপায়।

 উচ্চ রক্তচাপ কি?  উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে?


রক্ত চলাচলের সময় ধমনির গায়ে যে চাপ তৈরি হয় তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে। হৃৎপিণ্ডের সংকোচন বা সিস্টোল অবস্থায় ধমনীর গায়ে রক্তচাপের মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। একে সিস্টোলিক চাপ (Systolic Pressure) বলে। হৃৎপিণ্ডের (প্রকৃতপক্ষে নিলয়ের) প্রসারণ বা ডাইয়াস্টোল অবস্থায় রক্তচাপ সবচেয়ে কম থাকে। একে ডায়াস্টোলিক চাপ (Diastolic Pressure) বলে।
রক্তচাপ পরিমাপ করার জন্য দুটি দিক রয়েছে এবং দুই দিকের রিডিংয়ে সিস্টোলিক চাপ ১২০ MMHG এর চেয়ে বেশি বা সমান এবং ডায়াস্টোলিক চাপ ৮০ MmHg এর চেয়ে বেশি বা সমান হলে এই অবস্থায় blood pressure normal রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।
রক্তচাপ সাধারণ চার ভাগে ভাগ করা যায়। তার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ রক্তচাপ প্র্যাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।আর এই উচ্চ রক্তচাপের কোন লক্ষণ বুঝতে পারে না জন্য পরবর্তীতে তা ঝুকিপূর্ণ হয়ে দ্বারায়। সুতরাং সকলের উচিত নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ মতো ঔষধ সেবন করা।আর নিয়ম করে খাবার খাওয়া এবং ব্যায়াম করা।


রক্তচাপের পর্যায়

উচ্চ রক্তচাপের কোনো নির্দষ্ট লক্ষণ নেই তবে

▪️ স্বাভাবিক অবস্থায় : ১২০ mmhg এর চেয়ে কম এবং ৮০ mmhg এর চেয়ে কম। এটাকে Normal blood pressure range ধরা হয়।

▪️ High Blood Pressure (Hypertension  প্রথম ধাপ) : ১৩০ মি.মি এবং এর চেয়ে বেশি ৯০ মি.মি । 

▪️ High Blood Pressure(Hypertension দ্বিতীয় ধাপ):  ১৪০ মি.মি এর থেকে বেশি এবং ৯০ মি.মি এর বেশি।

▪️ Dangerously  High Blood Pressure(Hypertensive Crisis): ১৮০ mmhg এর চেয়ে বেশি এবং ১২০ মি.মি এর উপরে থাকলে বিপদজনক সংকেত। 

 উচ্চ রক্তচাপ :একজন সুস্থ স্বাভাবিক প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের ১২০/৮০ মি.মি চেয়ে  বেশি হয় তাহলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে মনে করা হয়। সাধারণ উচ্চ রক্তচাপ দুইটি আলাদা টাইপের হয়ে থাকে প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপ(Primary high blood pressure) এবং মাধ্যমিক উচ্চ রক্তচাপ(secondary blood pressure)

প্রাথমিক বা অপরিহার্য উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক প্রকারের হয়ে থাকে। যা সাধারণ সকল বয়সের মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং তা ধিরে ধিরে বিকাশ ঘটাচ্ছে। 

মাধ্যমিক উচ্চ রক্তচাপ অন্য রক্তচাপের চেয়ে ঘটিত হয়ে থাকে যা ঝুকিপূর্ণ তাই নিয়ম করে ঔষধ খেতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার খেতে হবে ও ব্যায়াম নিয়মিত করতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও কারণ : 

▪️ হাইপারটেনসিভ ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যা

▪️ প্রায় সময় মাথা ব্যাথা বা মাথা ঘুরে যাওয়া

▪️ মাঝে মাঝে নাক দিয়ে রক্ত পড়া 

▪️ সঠিক ভাবে ঘুম না হওয়া 

▪️ অবসাদ ও শরীর দুর্বলতা হওয়া 

▪️ অনিয়মিত হৃদস্পন্দন 

▪️ দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া ও টিনিটাসের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। 

এবং গুরুতর উচ্চ রক্তচাপে ক্লান্তি,বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া,বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়া,বুকে ব্যথা এবং পেশী কম্পনের কারণ  হতে পারে। তাই দেরি না করে নিকটতম কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গিয়ে রক্তচাপ পরিমাপ করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ মতো ঔষধ খাওয়া। 

উচ্চ রক্তচাপের কারণ

অতিরিক্ত মানসিক চাপ, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব,বয়সের চেয়ে বেশি ওজন,অত্যধিক মদপান ও ধুমপান,চর্বিযুক্ত মাংস,অতিরিক্ত ফল খাওয়া,অতিরিক্ত তেল খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ মানুষের বেশি হচ্ছে।

উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা গুলো কি কি?

সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ সবচেয়ে বেশি হার্টের সমস্যা করে থাকে যাকে আমরা হার্ট অ্যাটাক বলে থাকি। আর অতিরিক্ত চাপ ধমনিকে শক্ত করে যা হৃদপিণ্ডে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ মাত্রা কমে যায়।এবং বর্ধিত চাপ ও রক্ত প্রবাহ হ্রাস পেতে থাকে।

বুকে ব্যথা ও মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশনের ফলে হৃদপিণ্ডের রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং অক্সিজেনের অভাবে হার্টের পেশীকোষ গুলো মারা যায়। এবং যখন অন্যান্য হৃদপিণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পাম্প করতে পারে না তখন হার্ট ফেইলিউর হয়।এবং অনেক ক্ষেত্রে মানুষ স্ট্রোকও করে ও কিডনি ড্যামেজ হয়ে যায় এবং যার ফলে মৃত্যু হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা  

চিকিৎসার জন্য উচ্চ রক্তচাপে নিজের হার্টকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে হবে ও জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে এবং নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করতে হবে নিয়মিত ঔষধ সেবন করার মধ্য দিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তাহলে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।


উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়

নিয়মিত খাদ্য তালিকায়  লবনের পরিমাণ খাওয়া কমানো (প্রতিদিন ৫ গ্রামের কম)।

নিয়মিত বিভিন্ন রকম ফল ও সবজি রাখতে হবে

চর্বি যুক্ত মাংস খাওয়া এবং উচ্চ স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহণ করুন।এবং নিয়মিত রক্তচাপ নির্নয় করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন। 

এরপরও যদি রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে নিকটতম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করুন।

তথ্য সুত্র : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা who

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

© Neurologyhealthinfo. All rights reserved. Distributed by ASThemesWorld