এলার্জি প্রতিরোধের উপায় নিময় মানলে নির্মুল হয়।

আমাদের শরীর ক্ষতিকর নয় এমন অনেক ধরনের বস্তুকেও ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে এ প্রতিক্রিয়াকে এলার্জি বলে। চুলকানি,হাচি,সর্দি।

 লেখা- ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ পারভেজ আকতার।

এলার্কি কি এবং কেন হয়?

 অ্যালার্জি হচ্ছে একধরণের জীবানু বা ক্ষতিকর পদার্থের বিরুদ্ধে আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া যা সাধারণত সকল মানব দেহের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। যেসব পরদার্থ এই  প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে তাদের অ্যালার্জেন বলে। এগুলির মধ্যে রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট এলার্জি জাতীয় খাবার,পরাগ বা পোষা প্রাণীর লোম, ধুলাবালি, বিভিন্ন খাবার।মানুষের দেহের ইমিউন সিস্টেমের কাজ হল ক্ষতিকারক রোগজীবাণু গুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখা। যেসব রোগজীবানু মানুষের শরীরে ক্ষতি করতে পারে বলে মনে করে এগুলোকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ (ইমিউন) আক্রমণ করে। কখনো কখনো আমাদের শরীর ক্ষতিকর নয় এমন অনেক ধরনের বস্তুকেও ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। সাধারণত ক্ষতিকর নয় এমন বস্তুর প্রতি শরীরের এ অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকেই এলার্জি বলে।


অ্যালার্জেন গুলো যখন মানুষের শরীরে কোনভাবে প্রবেশ করে, তখন রোগ প্রতিরোধকারি কোষগুলো একে আক্রমন করে যেন তা শরীরের কোন ক্ষতি করতে না পারে। তারপর কোষ এই অ্যালার্জেনের অংশগূলো দিয়ে নিজেকে ঘিরে ফেলে এবং কাছাকাছি অবস্থিত লিম্ফ টিস্যুর কাছে চলে যায়। লিম্ব টিস্যুর কাছে আসার পর অ্যালার্জেনের অংশগুলো আরও ইমিউনো সেল বা রোগ প্রতিরোধকারি কোষের কাছে বিতরন করে যেন তারা দলবদ্ধভাবে কাজ করে একটি প্রতিরক্ষা অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে যাকে বলা হয় ইমিউনো গ্লোবিউলিন ই বা আই জি ই।


মানুষের শরীর যদি পুনরায় এই অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসে তখন এই এন্টিবডি যা মূলত এক ধরণের প্রোটিন যা বাহিরের রোগ জীবাণু কিংব ক্ষতিকর পদার্থেকে ঘিরে ফেলে শরীর থেকে বের করে দেবার জন্য বিশেষ ভাবে প্রস্তুতকৃত তার আক্রমন শুরু করে। প্রথমে সে তার রোগ প্রতিরোধকারি কোষের একটি অংশ সচল করে যাকে বলে ম্যাস্ট সেল। এই ম্যাস্ট সেল প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যাল নির্গমন শুরু করে যার একটি গ্রুপ হচ্ছে হিসটামিন যাদের কাজ আপনার শরীরের সবথেকে ছোট রক্তনালীকে যাকে বলা হয় ক্যাপিলারি, প্রসারিত করে যেন শ্বেত রক্তকনিকা এই ক্যাপিলারি দিয়ে প্রবেশ করে ক্ষতিকর পদার্থ বা জীবানুর সাথে যুদ্ধ করতে পারে। কিন্তু এই প্রসারনের ফলে শুধু যে শ্বেত রক্তকনিকা প্রবেশ করেনা বরং এর ফলে ভেতর থেকে তরল পদার্থ বেরিয়ে যেতে শুরু করে যার ফলে সর্দি, কাশি এবং হাচি উপসর্গ দেখা দেয় যাকে আমরা এলার্জি বলি।


এলার্জি এর লক্ষণ


অ্যালার্জেনের ধরনের উপর এলার্জি উপসর্গ নির্ভর করে।

এলার্জি আমাদের দেশের অসংখ্য মানুষের কাছে এক বিরক্তিকর সমস্যার নাম। এলার্জি (allergic reaction) এর কারণে হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য বা ঔষুধের উপর ভীষণ প্রতিক্রিয়া এমনকি শ্বাসকষ্টও হাপানী হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এলার্জি সামান্য অসুবিধা সৃষ্টি করে আবার কারো ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। ধুলাবালি, ফুলের ঘ্রান, গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ, গরুর দুধ ইত্যাদি তুচ্ছ ব্যাপারে গা চুলকানি অ্যালার্জি ইনফেকশন শুরু হলে অথবা চামড়ায় লাল লাল রিং বা চাকা হয়ে ফুলে উঠলে ধরে নিতে হবে আপনার এলার্জি allergy a disease আছে।

এলার্জি থেকে বাচার উপায়

এলার্জি মুলত ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন বস্তু, খাবার, ঘ্রাণ, পরিবেশগত, জিনগত, এমন কি পোশাকে ও কারো কারো এলার্জি থাকে এলার্জি থেকে বাচতে একমাত্র কার্যকরি উপায় হলো। যার যে যিনিসের প্রতি এলার্জি সেটা থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

যাদের খাবারে এলার্জি তাদের জন্য শুকনো নিমপাতা গুড়া ও ইসবগুলের ভুষি পানিতে ভিজিয়ে ২১/৩০ দিন সকালে খালি পেটে পান করলে নিরাময় হয়। এবং তারা সব ধরণের খাবার পরবর্তীতে খেতে পারবে কোন চুলকানি হবে না।
এতে কাজ না হলে এন্টিহিস্টামিন বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

© Neurologyhealthinfo. All rights reserved. Distributed by ASThemesWorld